অতিরিক্ত টেস্টের অত্যাচার বন্ধে আইন উপদেষ্টার আহ্বান
বাংলাদেশের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ওপর অতিরিক্ত টেস্ট চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক চিকিৎসক রোগী দেখে প্রয়োজনীয় না হলেও একসাথে ৮-১০টি পর্যন্ত টেস্ট লিখে দেন। ফলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো টেস্ট ব্যবসার মাধ্যমে ফুলে-ফেঁপে উঠছে।
এই পরিস্থিতিকে ‘রোগীর ওপর অমানবিক বোঝা’ আখ্যা দিয়ে আইন উপদেষ্টা এক বক্তব্যে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অতিরিক্ত টেস্টের অত্যাচার বন্ধ করতে। আইন উপেদেষ্টা ঠিকই বলেছেন, “চিকিৎসা একটি মানবিক সেবা। এখানে রোগীর কষ্টের কথা না ভেবে অযথা টেস্ট দিয়ে কমিশন বাণিজ্য করা কোনভাবেই নৈতিক নয়।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বড় বড় শহর থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়েও এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে অনেক সেন্টার চিকিৎসকদের কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করাতে উৎসাহ দেয়। এর ফলে রোগীরা শুধু অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তই হন না, বরং সময় ও মানসিক দিক থেকেও ভোগান্তিতে পড়েন।
রোগী অধিকার সুরক্ষা সংগঠনগুলো বলছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কার্যকর ভূমিকা না থাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক চিকিৎসা সংস্কৃতি দিন দিন বিস্তার লাভ করছে। তারা দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ ও কার্যকর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছে।
চিকিৎসকদের মনে রাখতে হবে, রোগী চিকিৎসকের কাছে শুধু শারীরিক নয় মানসিক ভরসাও খুঁজে পায়। সেখানে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট চাপিয়ে দিয়ে রোগীকে প্রতারিত করা সেবার আদর্শ থেকে বিচ্যুতি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিকিৎসা খাতকে ব্যবসায়িক বাণিজ্য থেকে মুক্ত করতে না পারলে সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হবে এবং এর প্রভাব গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচকভাবে পড়বে।