ভঙ্গুর প্রশাসনের উপর ভর করে নির্বাচন?—ড. ইউনূসের সামনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, একটি ভঙ্গুর ও দলীয়কৃত প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল নির্বাচন কোনোভাবেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না। এতে শুধু নির্বাচনের বৈধতাই প্রশ্নবিদ্ধ হবে না, বরং সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিও তৈরি হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রশাসন যখন নিরপেক্ষতা হারায়, তখন নির্বাচন কার্যত ক্ষমতাসীন শক্তির পক্ষে অনুকূল হয়ে ওঠে। ফলাফল ঘোষণার পর বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের মনে গভীর অবিশ্বাস তৈরি হয়। এর ফলে একতরফা নির্বাচন, সহিংসতা এবং দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার ঝুঁকি থেকে যায়।
এই পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে মূলত দুইটি পথ খোলা রয়েছে। প্রথমত, তিনি ভঙ্গুর প্রশাসনের ভরসায় নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বটে, তবে নির্বাচনের ফলাফল বৈধতা পাবে না বলে আশঙ্কা প্রবল। একইসঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়তে পারে।
দ্বিতীয়ত, তিনি পদত্যাগ করে ঘোষণা দিতে পারেন যে, রাষ্ট্রীয় সংস্কার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এতে তাঁর নৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসবে। তবে এতে দেশের ভেতরে ক্ষমতার শূন্যতা ও নতুন রাজনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান বাস্তবতায় সরাসরি নির্বাচন করার চেয়ে ন্যূনতম রাষ্ট্র সংস্কার নিশ্চিত করে পরবর্তীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করাই যৌক্তিক সমাধান হতে পারে। যদি সে সংস্কার সম্ভব না হয়, তবে পদত্যাগ করে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া—ড. ইউনূসের জন্য নৈতিক ও কৌশলগতভাবে উত্তম পদক্ষেপ হবে।