Flash Story
কুরআনের অবমাননা
কুরআনের অবমাননা- নর্থ সাউথের অপূর্ব পালকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
বিশ্বনেতাদের ওয়াকআউট
বিশ্বনেতাদের ওয়াকআউট- জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য বয়কট বিশ্বনেতাদের।
উত্তাল ভারতের লাদাখ
উত্তাল ভারতের লাদাখ: জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল কেন শীতল লাদাখ???
উইঘুর মুসলিম গণহত্যা
উইঘুর মুসলিম গণহত্যা: চীনের অন্ধকারতম রহস্য
গাজায় প্রকোশ্যে মৃত্যুদন্ড
গাজায় প্রকোশ্যে মৃত্যুদন্ড: গাজায় ইসরায়েলের তিন গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
রেড লাইন ঘোষণা
রেড লাইন ঘোষণা: ফ্রান্স ও সৌদি আরব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘রেড লাইন’ ঘোষণা
উত্তাল রাকসু নির্বাচন
উত্তাল রাকসু নির্বাচন- রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর, উত্তাল ক্যাম্পাস
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা- রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা
Gen-Z এর ইসলামপ্রীতি
Gen-Z এর ইসলামপ্রীতি: নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুসলিম হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনায় নতুন জাগরণ।
উত্তাল রাকসু নির্বাচন
Share this article

উত্তাল রাকসু নির্বাচন: ভূমিকা

বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ — রাকসু (RAKSU) — নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা তারূণ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত পেছিয়ে দেয়া নির্বাচন তারিখ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও আন্দোলন, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা — সব মিলিয়ে এই নির্বাচন “উত্তাল রাকসু নির্বাচন” হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর হচ্ছে না। বর্তমানে অনূকুল পরিবেশ না থাকায় আগামী ১৬ অক্টোবর নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেন রাকসু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ?-

  • বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি প্রতীকী ইভেন্ট — এটি বিকল্প ভাবমূর্তি তৈরি করে শাসন ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির।
  • রাকসু নির্বাচন আপাতবিরোধিতা ও আশঙ্কা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ায়।
  • এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার, স্বচ্ছতা ও তত্ত্বাবধান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সুতরাং, “উত্তাল রাকসু নির্বাচন” শুধু একটি আনুষ্ঠানিক নির্বাচন নয় — এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের পরীক্ষাও বটে।

রাকসু নির্বাচন পেছানোর কারণ

নির্বাচন পেছানোর দুটি কারণ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হচ্ছে

১. বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে।

২. নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।

৩. পোষ্য কোটা পুনর্বহালের আন্দোলন

রাকসু নির্বাচনের ঘটনাপ্রবাহ-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান শাটডাউন কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (রাকসু) ভোটগ্রহণ আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর হচ্ছে না। এর পরিবর্তে ১৬ অক্টোবর হবে রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। গতকাল সোমবার রাতে রাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু, আবাসিক হল ও সিনেট- এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনপূর্ব উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান পরিস্থিতি কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূলে নয় বলে সভায় জানানো হয়। কারণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি যথেষ্ট ছিল। কিন্তু যাদের নিয়ে আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করব, তাদের অনুপস্থিতি নির্বাচন পেছাতে কমিশনকে বাধ্য করেছে। তাই গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করছি, এর মধ্যে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমান বলেন, আমরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি নতুন যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেদিন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

 শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবি:

শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের ফৌজদারি আইনে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাবি উপ-উপাচার্য ও শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে তারা এ দাবি জানান। কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন আমাদের কাছে কোনো ফ্যাক্টর নয়। মূলত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে আমাদের এই কর্মসূচি। যতক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষক লাঞ্ছিতকারীদের বিচার না হবে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

জাতীয়বাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমরা বিবৃতি দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছি। আবার যখন প্রত্যাহার করব তখন অবশ্যই বিবৃতি দিয়েই করব। তবে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এবং যারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ‍সৃষ্টির পেছনে দায়ি তাদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

উত্তাল ক্যাম্পাস– 

এদিকে পূর্বনির্ধারিত ২৫ সেপ্টেম্বরই রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ করেছে শিবির সমর্থিত প্যানেলসহ কয়েকটি প্যানেল। শিবিরের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ঠিক মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল ছাত্রদল ও বাম প্যানেলের প্রার্থীসহ কয়েকটি প্যানেলও। তবে ১৬ অক্টোবর নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রদলসহ অন্য প্যানেল রাকসু কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে গেলেও রাত সাড়ে ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে শিবির।

ছাত্রদল বেশ কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীর দাবি:

ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন পেছানোর পক্ষে মত দেন  ছাত্রদল বেশ কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা। গতকাল দুপুরে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। ফলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা একেবারেই নেই। তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাকসু নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর সুষ্ঠু এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে সম্ভব নয়। নির্বাচন উৎসবমুখর এবং গ্রহণযোগ্য করতে পূজার পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।’

শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাকসু নির্বাচন পেছানোয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রশিবিরসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। রাকসু নির্বাচন পেছানোর আগে থেকেই তারা রাকসু কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার পর তারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।

জানতে চাইলে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ও শিবিরের রাবি শাখা সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘একটি মহল রাকসু চায় না। তারা এর আগেও নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করেছে। কারণ, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় পায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে তারা যেতে পারেন না। এজন্য রাকসু নির্বাচন বানচালে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। এরই ফসল আজ নির্বাচন পেছানো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে দাবি, কোনো টালবাহানা না করে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।

নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আরও চার প্যানেলের

রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচন শাটডাউনের মধ্যে করা যাবে না বলে মত দিয়েছিলেন চারটি স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা। ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই মত দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সচেতন শিক্ষার্থী সংসদের (ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ) ভিপি প্রার্থী মাহবুব হোসেন, রাকসু ফর র‍্যাডিকাল চেঞ্জ প্যানেলের ভিপি মেহেদী মারুফ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা। মোট ১১টি প্যানেলের মধ্যে এ চারটি প্যানেল সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়।

ক্যাম্পাসে ছিল না নির্বাচনী কার্যক্রম

গতকাল শাটডাউন কর্মসূচি পালিত হওয়ায় ক্যাম্পাসে ছিল না কোনো নির্বাচনী আমেজ। পোষ্যকোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন মুখোমুখি। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ঘোষণা দিয়েছে—লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতি দিয়েছে কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক। ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে কার্যত ফাঁকা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : কেন রাকসু নির্বাচন পেছানো হলো?
উত্তর: প্রশাসন বলেছে ক্যাম্পাসে প্রতিকূল পরিস্থিতি ও কর্মবিরতির কারণে প্রস্তুতি ব্যাহত হয়েছে, তাই নির্বাচন পেছানো হয়েছে।

প্রশ্ন : শিক্ষার্থীরা কী দাবি করছে?
উত্তর: তারা দাবি করছে নির্বাচন ফিরিয়ে আনা হোক, রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক, এবং নির্বাচন কমিশন জবাবদিহি হোক।

প্রশ্ন : “উত্তাল রাকসু নির্বাচনঅভিব্যক্তির গুরুত্ব কী?
উত্তর: এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি গঠনের পরীক্ষা।


Share this article

Leave a Reply

Back To Top