Flash Story
কুরআনের অবমাননা
কুরআনের অবমাননা- নর্থ সাউথের অপূর্ব পালকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
বিশ্বনেতাদের ওয়াকআউট
বিশ্বনেতাদের ওয়াকআউট- জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য বয়কট বিশ্বনেতাদের।
উত্তাল ভারতের লাদাখ
উত্তাল ভারতের লাদাখ: জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল কেন শীতল লাদাখ???
উইঘুর মুসলিম গণহত্যা
উইঘুর মুসলিম গণহত্যা: চীনের অন্ধকারতম রহস্য
গাজায় প্রকোশ্যে মৃত্যুদন্ড
গাজায় প্রকোশ্যে মৃত্যুদন্ড: গাজায় ইসরায়েলের তিন গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
রেড লাইন ঘোষণা
রেড লাইন ঘোষণা: ফ্রান্স ও সৌদি আরব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘রেড লাইন’ ঘোষণা
উত্তাল রাকসু নির্বাচন
উত্তাল রাকসু নির্বাচন- রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর, উত্তাল ক্যাম্পাস
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা- রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা
Gen-Z এর ইসলামপ্রীতি
Gen-Z এর ইসলামপ্রীতি: নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুসলিম হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনায় নতুন জাগরণ।
younus
Share this article

জুলাই অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশ গড়তে: ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সাফল্য ও ব্যর্থতা-

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান একটি যুগান্তকারী ঘটনা। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, স্বৈরাচারী শাসন এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছিল। এই পরিস্থিতিতে, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। এই অভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও সামাজিক উদ্যোক্তা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

“নতুন বাংলাদেশ” গড়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন, কিন্তু রাজনৈতিক বাস্তবতা, সংবিধানগত চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সংকট তার জন্য পথচলা সহজ করে দেয়নি। এই ব্লগে আমরা বিশ্লেষণ করব—জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ গড়তে ড. ইউনূস কতটা সফল এবং কোথায় তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

 পটভূমি: জুলাই অভ্যুত্থান ও ক্ষমতা গ্রহণ-

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের নেতৃত্বে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়, যা দ্রুত সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শাসক দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন—স্বচ্ছ নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন এবং জনগণের আস্থা পুনর্গঠনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার। কিন্তু প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তবায়ন সবসময় অনেক বেশি কঠিন।

 সাফল্যসমূহ –

আস্থা পুনঃস্থাপনে উদ্যোগ: জনগণ ও সরকারের মধ্যে নতুন সেতুবন্ধন-

জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় জনগণের আস্থা পুনর্গঠন। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অদক্ষতা মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি গভীর অবিশ্বাস তৈরি করেছিল। এই পরিস্থিতিতে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে একটি নতুন আস্থার সম্পর্ক গড়তে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা:

ড. ইউনূস বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা হবে প্রশাসনের মূল ভিত্তি। এজন্য তিনি—

  • সরকারি খরচের অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করেছেন।

  • দুর্নীতি দমনে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছেন।

  • সব মন্ত্রণালয়ে বার্ষিক কর্মক্ষমতা প্রতিবেদন প্রকাশ বাধ্যতামূলক করেছেন।

সংলাপ ও রাজনৈতিক ঐক্য:

জনআস্থা পুনঃস্থাপনে রাজনৈতিক সংলাপ অপরিহার্য। তাই তিনি—

  • বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় সংলাপ ফোরাম আয়োজন করেছেন।

  • মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদদের সরাসরি নীতি প্রণয়নে যুক্ত করেছেন।

  • গ্রামীণ অঞ্চলে জনগণের মতামত শোনার জন্য ওপেন ফোরাম সভা শুরু করেছেন।

সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও নাগরিক অংশগ্রহণ:

নতুন বাংলাদেশে আস্থা গড়তে শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্র নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে—

  • নারীর ক্ষমতায়ন ও যুব উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি।

  • স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়ন করে নিচ থেকে উপরের প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি।

  • নাগরিক পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন, যেখানে মানুষ সরাসরি অভিযোগ ও প্রস্তাব দিতে পারে।

দীর্ঘ রাজনৈতিক দমননীতির পর মানুষ সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। ইউনূস প্রথমেই ঘোষণা দেন যে তার সরকার জনগণের সরকার, এবং তিনি নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখবেন। ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে তিনি নির্বাচন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, সংবিধান সংশোধনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাজ শুরু করেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা: নতুন বাংলাদেশে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ-

জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিভাজন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বের ফলে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম থেকেই নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়।

প্রথম দফার সংস্কার পরিকল্পনা:

ড. ইউনূস আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেন

  • পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল – জনভোগান্তি কমানো এবং দুর্নীতির সুযোগ হ্রাস।

  • সংবেদনশীল এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা জোন ঘোষণা – সহিংসতা প্রবণ এলাকাগুলোতে দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার।

  • স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া – পুলিশ ও প্রশাসনে রাজনৈতিক নিয়োগ বন্ধ করা।

  • সাইবার ক্রাইম ইউনিট শক্তিশালী করা – অনলাইন গুজব ও উসকানিমূলক প্রচারণা দমন।

রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ:

যদিও এসব পদক্ষেপ কিছুটা সফল হয়েছে, তবুও রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। বিরোধী দলের আন্দোলন, ছোট ছোট সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান এবং সামাজিক অস্থিরতা পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চাপের মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে, অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় কিছু গোষ্ঠী প্রশাসনের নির্দেশ মানতে অনাগ্রহী।

জনগণের আস্থা পুনর্গঠন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জনগণের আস্থা অর্জন। ড. ইউনূস একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের বন্ধু এবং প্রশাসন হবে জবাবদিহিমূলক। কিছু এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম চালু করে তিনি নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছিল। ড. ইউনূস আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকে প্রধান অগ্রাধিকার দেন। উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের মধ্যে একটি হলো পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল—যা নাগরিক ভোগান্তি অনেক কমিয়েছে।

 নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা-

প্রথমে এপ্রিল ২০২৫-এ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রস্তুতির জন্য তা পিছিয়ে ফেব্রুয়ারি ২০২৬ নির্ধারণ করা হয়। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন—এটি হবে ইতিহাসের সবচেয়ে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।

সামাজিক ব্যবসা ও তরুণ উদ্যোক্তা: নতুন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা-

জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ গঠন–এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ। ড. মোহাম্মদ ইউনূস তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, বিশেষত গ্রামীণ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট মডেল এবং সামাজিক ব্যবসা ধারণাকে কাজে লাগিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে আনার চেষ্টা করছেন।

তিনি বিশ্বাস করেন—যুব সমাজের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা দিলে এবং সঠিক বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিলে তারা শুধু নিজেদের জন্য নয়, সমাজের জন্যও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে। এ কারণেই অন্তর্বর্তী সরকার যুব উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যেখানে মূল লক্ষ্য হলো—

  • বেকারত্ব সমস্যা সমাধান

  • গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করা

  • প্রযুক্তি-নির্ভর স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি

  • টেকসই সামাজিক ব্যবসা গড়ে তোলা

সামাজিক ব্যবসার মূল বৈশিষ্ট্য:

  • লাভ নয়, প্রভাবই লক্ষ্য – ব্যবসার আয় পুনরায় বিনিয়োগ করে সামাজিক সমস্যা সমাধান করা।

  • স্থানীয় সম্পদের ব্যবহার – গ্রামের সম্পদ ও দক্ষতা কাজে লাগানো।

  • টেকসই কর্মসংস্থান – স্বল্প বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদি আয়ের সুযোগ।

  • দুর্নীতি প্রতিরোধ – স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

যুব উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্যোগ:

ড. ইউনূস তরুণদের জন্য বেশ কিছু বাস্তবধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন—

  • স্টার্টআপ ফান্ড গঠন

  • অনলাইন মার্কেটপ্লেসে স্থানীয় পণ্য বিক্রির সুযোগ

  • নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা

  • ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন

এসব উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।

গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ তৈরি করতে সামাজিক ব্যবসার মডেল চালু করেন। লক্ষ্য ছিল—বেকারত্ব কমানো ও নতুন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করা।

 ব্যর্থতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ-

 সংবিধানগত বৈধতা সংকট:

অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। ২০১১ সালের সংবিধান সংশোধনের পর caretaker government ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায়, অনেকের কাছে এই সরকার অসাংবিধানিক বলে প্রতীয়মান।

 সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকট:

যদিও ড. ইউনূস সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলেছেন, বাস্তবে অনেক সাংবাদিক হয়রানি, মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এর সমালোচনা করেছে।

 রাজনৈতিক বিভাজন ও সহিংসতা:

রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর নতুন দলগুলো যেমন ছাত্র-নেতৃত্বাধীন “ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি” উঠে এসেছে, কিন্তু রাজনৈতিক বিভাজন কমেনি।

অর্থনৈতিক স্থবিরতা:

কারখানা বন্ধ, বিনিয়োগ কমে যাওয়া, বৈদেশিক ঋণ কম পাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে মন্দা অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। অনেক সমালোচক বলছেন, সরকার সংস্কারের চেয়ে বিদেশ সফরে বেশি সময় ব্যয় করছে।

 সাফল্য ও ব্যর্থতার তুলনামূলক চিত্র-

ক্ষেত্র সাফল্য ব্যর্থতা
আইনশৃঙ্খলা পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল, সহিংসতা কমাতে চেষ্টা রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে ব্যর্থতা
গণতন্ত্র নির্বাচন ঘোষণা, সংস্কার কমিশন সংবিধানগত বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ
সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবে সাংবাদিক হয়রানি
অর্থনীতি সামাজিক ব্যবসা প্রচার বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি স্থবির

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও করণীয়-

১. সংবিধান সংশোধন ও বৈধতা নিশ্চিত
অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি জরুরি। এজন্য সর্বদলীয় আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন।

২. স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, ইলেকট্রনিক ভোটিং ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে হবে।

৩. সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মুক্ত তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৪. অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, শিল্প কারখানা সচল ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা জরুরি।

উপসংহার-

জুলাই অভ্যুত্থানের পর ড. মোহাম্মদ ইউনূস “নতুন বাংলাদেশ” গড়তে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন—যেমন সংস্কার কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক ব্যবসা। কিন্তু সংবিধানগত বৈধতা, রাজনৈতিক বিভাজন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক স্থবিরতা তার সাফল্যে ছায়া ফেলেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই সময়টি হবে একটি পরীক্ষা—যেখানে দেখা যাবে, একটি অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সত্যিই কি দেশের ভবিষ্যৎকে বদলাতে পারে, নাকি পুরনো ব্যর্থতার ইতিহাসই পুনরাবৃত্তি হবে।

প্রশ্নোত্তর-

  • জুলাই অভ্যুত্থানে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা কী ছিল?
    -ড. মোহাম্মদ ইউনূস জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দুর্নীতি দমন এবং যুব উদ্যোক্তা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা করেন।
  • ড. ইউনূসের অর্থনৈতিক সংস্কারের মূল লক্ষ্য কী?
    -তার অর্থনৈতিক সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো বেকারত্ব কমানো, সামাজিক ব্যবসার প্রসার, প্রযুক্তি-নির্ভর স্টার্টআপ গড়ে তোলা এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা। তিনি বিশ্বাস করেন যে, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে অর্থনীতিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হবে।
  •  ড. ইউনূসের সংস্কার পরিকল্পনার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী?
    -প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা, প্রশাসনিক জটিলতা, বিনিয়োগ ঘাটতি, গ্রামীণ অবকাঠামো দুর্বলতা এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। এসব সমস্যার সমাধান না হলে সংস্কার কার্যক্রমের সাফল্য দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নাও হতে পারে।
  • ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কী কী ব্যর্থতা দেখা গেছে?
    যদিও অনেক ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তবুও বাস্তবায়নে নানা সীমাবদ্ধতা ছিল। বিনিয়োগ ঘাটতি, অবকাঠামোগত সমস্যা, রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সীমিত সাফল্য এবং প্রশাসনিক ধীরগতি—এসব কারণে পরিকল্পনার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জিত হয়নি।
  • ব্যর্থতার প্রধান কারণ কী ছিল?
    প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে পরিবর্তনের প্রতি অনীহা, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দ্বিধা এবং দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য জনগণের চাপ। এসব কারণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
  •  ভবিষ্যতে সফল হতে হলে কী করতে হবে?
    দীর্ঘমেয়াদে সফলতার জন্য রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা, দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা এবং যুব উদ্যোক্তাদের সহায়তায় আরও বড় আকারের অর্থনৈতিক কর্মসূচি চালু করতে হবে।
  •  ড. ইউনূসের সংস্কার পরিকল্পনার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী?
    -প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা, প্রশাসনিক জটিলতা, বিনিয়োগ ঘাটতি, গ্রামীণ অবকাঠামো দুর্বলতা এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। এসব সমস্যার সমাধান না হলে সংস্কার কার্যক্রমের সাফল্য দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নাও হতে পারে।

Share this article

Leave a Reply

Back To Top